এবিএনএ : বয়স লুকাতে চান? সুস্থ থাকতে ও তারুণ্য ধরে রাখতে কিছু খাবার পুরুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। নিয়মিত এসব খাবার খেলে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না। বয়স বাড়তে শুরু করলে শরীরে তার চিহ্ন ফুটতে শুরু করে। শুধু বয়সের ছাপ নয়, শরীর দুর্বলবোধ হতে থাকে। যাঁরা বংশগতভাবে ভাগ্যবান বা যাঁরা স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সহজে বয়স বোঝা যায় না। বয়স চল্লিশের কোঠায় যাওয়ার পর থেকে মেটাবলিজমের হার কমতে থাকে। তাই এ সময় শরীর ঠিক রাখতে খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদিও দেহঘড়ির চলার পথ আটকানো কঠিন, তারপরও কিছু খাবারের কারণে বয়সের ছাপ পড়ার হার ঠেকিয়ে রাখা যায়। ভারতের পুষ্টিবিদ শিল্পা অরোরার মতে, কিছু খাবার আছে, যা ফাইটোনিয়ট্রিয়েন্টে ভরপুর। এ ছাড়া তারুণ্য ধরে রাখতে ওমেগা-৩ ফ্যাট, লাইকোপেন, ভিটামিন ‘সি’ নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত। তারুণ্য ধরে রাখে—এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন:
টমেটো: টমেটোতে আছে লাইকোপেন। এটি শরীর সুস্থ রাখে এবং তারুণ্য ধরে রাখে। ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ থেকে এটি শরীরকে সুরক্ষা দেয়। টমেটো ত্বকে কোলাজেন তৈরি করে এবং ত্বকে প্রোটিনের সরবরাহ বজায় রাখে। টমেটোর আছে নানা গুণ। এতে আছে ভিটামিন ‘এ’, যা আমাদের ত্বক সুন্দর রাখে। স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে ভিটামিন ‘সি’। প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটো থেকে শক্তি পাওয়া যায় প্রায় ২০ ক্যালরি। টমেটোতে পানির পরিমাণ প্রায় ৯৪ শতাংশ। ‘লাইকোপেন’ নামের একধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতির কারণে টমেটোর রং লাল। লাইকোপেন শরীরের মুক্ত যৌগমূলকগুলোকে নষ্ট করে দেয় এবং কোষগুলোকে রক্ষা করে। লাইকোপেন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। প্রোস্টেট, বৃহদন্ত্র, মলাশয়, পাকস্থলী, গ্রাসনালি ইত্যাদি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্যানসার প্রতিরোধে টমেটো সহায়ক ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় এ ব্যাপারে প্রমাণ মিলেছে।
মাছের তেল: মাছের তেল ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস। এটি শরীরের কোষের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ঠিকমতো চালাতে সাহায্য করে। এতে উচ্চমাত্রার হজমে সহায়ক প্রোটিন আছে, যা ত্বকের বলিরেখা দূর করে। এটি রক্তের চিনির মাত্রা কমায়, যা বয়সের ছাপ ফেলার জন্য প্রাথমিক কারণ হিসেবে মনে করা হয়। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় তাই মাছ রাখা উচিত।
বাদাম: সুস্বাস্থ্যের বিবেচনায় প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় বাদাম রাখা উচিত। তারুণ্য ধরে রাখতে এতে দরকারি ভিটামিন ও পুষ্টি আছে। কাজুবাদাম, আখরোট ও কাঠবাদাম ওমেগা-৩-এর প্রয়োজনীয়তা মেটায়।
বেরি: স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি ও ব্লুবেরিতে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভোনয়েডসের ভালো উৎস। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, যা কোলাজেনকে শক্তিশালী করে। এতে ত্বকের দাগ কমায়।
গ্রিন টি: তারুণ্য ধরে রাখতে অনেক জনপ্রিয় একটি পানীয় হচ্ছে গ্রিন টি বা সবুজ চা। সবুজ চায়ে রয়েছে একাধিক পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থ, যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ভাঁজহীন ত্বক এবং অভ্যন্তরীণ অবস্থা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
দই: দইয়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া শরীরের জন্য ভালো। দই বয়সের কারণে হওয়া রোগগুলো প্রতিরোধ করে। দইয়ে ক্যালসিয়ামও থাকে। প্রোটিনের দারুণ উৎস দই। প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া হজমে সাহায্য করে। এতে রিবোফ্লোবিন, ফসফরাস ও ভিটামিন ১২ রয়েছে।
অ্যাভোকাডো: পুষ্টিকর ফলগুলোর মধ্যে অ্যাভোকাডো একটি। কেননা, এর মধ্যে আছে নানা ঔষধি গুণও। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ‘ই’ ও ‘কে’। আছে প্রচুর পটাশিয়াম, যা কলার চেয়ে ৬০ ভাগ বেশি। ১৮ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, ৩৪ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভালো কোলেস্টেরল, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে। অর্থাৎ শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে।